ইসলামিক শিক্ষণীয় ঘটনা - ইসলামিক গল্প | Islamic Golpo
Golpo,ইসলামিক বাংলা গল্প | Islamic Bangla
![]() |
| ইসলামিক গল্প |
ইসলামিক গল্প থেকে শিক্ষা,ইসলামিক বাস্তব গল্প
ইসলামিক শিক্ষণীয় ঘটনা - ইসলামিক গল্প | Islamic Golpo
হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্নে দীনার (রাঃ) বলিয়াছেনঃ এক সময় আমি ও হযরত ওমর ফারূক রাযিয়াল্লাহু আনহু মক্কা মুআযযমার দিকে যাইতেছিলাম, পথিমধ্যে বিশ্রাম গ্রহণের নিমিত্ত আমরা কোন একস্থানে অবতীর্ণ হইলাম। এমন সময় কাহারও একজন ক্রীতদাস পাহাড়ে ছাগল চরাইয়া ছাগলসহ আমাদের সম্মুখ দিয়া গৃহাভিমুখে যাইতেছিল। হযরত ওমর (রাঃ) উক্ত গোলামকে বলিলেনঃ উচিত মূল্যে আমার নিকট ছাগলগুলি বিক্রয় করিয়া ফেল। সে নিবেদন করিলঃ আমি অমুকের ক্রীতদাস, বকরীগুলির উপর আমার কোন অধিকার বা স্বত্ব নাই। মালিকের অনুমতি ভিন্ন বিক্রয় করিবার ক্ষমতা আমার নাই। পরীক্ষা করিবার উদ্দেশ্যে হযরত ওমর (রাঃ) তাহাকে বলিলেন : একটি বকরী আমার নিকট বিক্রয় কর। বাড়ী যাইয়া মালিককে বলিবে, একটি বকরী আমার অজ্ঞাতসারে নেকড়ে বাঘে খাইয়া ফেলিয়াছে।
সে কেমন করিয়া জানিতে পারিবে যে, তুমি একটি বকরী বিক্রয় করিয়া ফেলিয়াছ! গোলাম উত্তর করিলঃ আমার মালিক জানিতে না পাইলেও মহাপ্রভু আল্লাহ্ তা'আলা তো জানিতে পারিবেন। হযরত ওমর (রাঃ) রাখাল ভৃত্যের ঈদৃশ উত্তর শ্রবণে অধীর হইয়া রোদন করিতে লাগিলেন। অবশেষে প্রকৃতিস্থ হইয়া তাহার প্রভুকে ডাকিয়া আনিলেন এবং উপযুক্ত মূল্যে গোলামটিকে ক্রয়পূর্বক আযাদ (স্বাধীন) করিয়া দিলেন। বিদায়কালে গোলামকে সম্বোধন করিয়া তিনি বলিলেনঃ বৎস! আল্লাহ্ তোমাকে দেখিতেছেন। এই স্থির বিশ্বাস হৃদয়ে বদ্ধমূল রাখার কারণে আজ তুমি ইহজগতে দাসত্ব হইতে পরিত্রাণ পাইলে এবং ইহার ফলে পরলোকেও পরিত্রাণলাভ করিবে।
👇
কিমিয়ায়ে সা'আদাত🥀
সুন্দর ইসলামিক ঘটনা | ইসলামিক গল্প
![]() |
| ইসলামিক সত্য ঘটনা। |
ইসলামিক শিক্ষনীয় ঘটনা - হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহঃ)
হযরত আবু তোরাব বখ্শী রাহেমাহুল্লাহর এক প্রধান মুরীদ ছিলেন। তিনি সর্বদা নিজের কাজে ডুবিয়া থাকিতেন। হযরত আবু তোরাব (রঃ) একদিন তাহাকে বলিলেন 'তুমি যদি হযরত বায়েযীদ রাহেমাহুল্লাহর সহিত একবার দেখা করিতে, তবে খুবই ভাল হইত। মুরীদ উত্তর করিলেন: 'আমি বায়েযীদের পরওয়া করি না, তাহার সহিত দেখা করিয়া আমার কি লাভ হইবে।” হযরত আবু তোরাব (রঃ) অতঃপর কয়েকবার স্বীয় মুরীদকে হযরত বায়েযীদের সহিত সাক্ষাৎ করিবার জন্য উপদেশ দিলেন। পরিশেষে মুরীদ উত্তর করিলেনঃ 'আমি বায়েযীদের খোদাকে দর্শন করিতেছি—বায়েযীদকে দেখিয়া আমি কি করিব।' তখন হযরত আবু তোরাব বলিলেনঃ 'তুমি যেভাবে খোদাকে দর্শন করিতেছ এভাবে তাহাকে সত্তরবার দর্শন করা অপেক্ষা বায়েযীদ (রঃ)-কে একবার দর্শন করাই উত্তম।' মুরীদ আশ্চর্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন। ‘ইহার অর্থ কি?' হযরত আবু তোরাব বলিলেনঃ 'ওহে মূর্খ তুমি আল্লাহকে তোমার শক্তি অনুযায়ী দেখিতেছ। তোমার ভাণ্ডের ধারণ ক্ষমতানুযায়ী তিনি তোমার নিকট প্রকাশ পাইতেছেন। হযরত বায়েযীদের দরবারে গেলে দেখিতে পাইবে, তিনি নিজের ক্ষমতানুযায়ী খোদাকে দেখিতে পাইতেছেন এবং খোদাও বায়েযীদের ভাণ্ডের ক্ষমতানুসারে তাহার নিকট প্রকাশ পাইতেছেন। তখন তুমি আল্লাহ্কে বায়েযীদের ক্ষমতার পরিমাণে উপলব্ধি করিতে পারিবে। এই সূক্ষ্ম কথাটি বুঝিতে পারিয়া মুরীদ তৎক্ষণাৎ নিবেদন করিলেন ‘চলুন আমরা উভয়ে যাই। হযরত আবু তোরাব (রঃ) বলিয়াছেন: 'অতঃপর আমরা উভয়ে হযরত বায়েযীদ (রঃ) এর সাক্ষাৎ মানসে গমন করিয়া দেখিতে পাইলাম, তিনি এক জঙ্গলের মধ্যে অবস্থান করিতেছেন। আমরা তাহার নিকটে পৌঁছিলে তিনি ছাগ-চর্ম নির্মিত একটি জামা উল্টাভাবে পরিয়া বাহিরে তাশরীফ আনিলেন। আমার মুরীদ তাহাকে দেখিবামাত্র এক বিকট চীৎকার সহকারে ভূতলে পড়িয়া তৎক্ষণাৎ মানবলীলা সংবরণ করিল।' আমি বলিলাম ‘হে বায়েযীদ (রঃ)! তোমাকে কেহ এক নযর দেখিতে আসিলেই কি সে হত্যার উপযুক্ত হইয়া যায়?” তিনি বলিলেনঃ 'না, তাহা হইবে কেন? তোমার মুরীদ নিতান্ত ছাদেক অর্থাৎ, অকপট ছিল, তাহার হৃদয়ের সম্মুখে এক নিগূঢ় রহস্য বিদ্যমান ছিল। তাহার নিজ ক্ষমতায় সেই রহস্যভাব উদ্ঘাটিত হইতেছিল না। সে আমার প্রতি দৃষ্টিপাত করিবামাত্র উক্ত গূঢ় রহস্য তাহার হৃদয়ের সম্মুখে উন্মুক্ত হইয়া পড়িল। তাহার ভাণ্ডের দুর্বলতাবশতঃ অমন শক্তিশালী গূঢ় রহস্যের চাপ সহ্য করিতে না পারিয়া মারা পড়িল। এই রহস্যটি ক্রমে ক্রমে প্রকাশ পাইলে এবং এদিকে ক্রমে ক্রমে তাহার ভাণ্ড সবল হইতে থাকিলে সে সহ্য করিতে অভ্যস্ত হইয়া পড়িত।
👇
হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)
(কিমিয়ায়ে সাআদাত)
.png)
