মৃত্যুর প্রতিক্ষা | মৃত্যুর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা - বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)


মৃত্যুর প্রতিক্ষা |মৃত্যু অনিবার্য | মৃত্যু নিয়ে উক্তি


মৃত্যুর প্রতিক্ষা | মৃত্যুর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা - বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)
মৃত্যু অনিবার্য






 মৃত্যুর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা - বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)



প্রত্যেক মুমিন ও জ্ঞানীদের 'মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী' একথার উপর বিশ্বাস রাখা অবশ্য কর্তব্য। তাহাদের উচিত মৃত্যুকে বার বার স্মরণ করা এবং মৃত্যুর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করিয়া রাখা ও প্রতি মুহূর্তে তাওবাহ করা, নিজের লেন-দেনের হিসাব নিকাশ করিয়া ও অন্যের হক হুকুম আদায় করিয়া সম্পূর্ণ পরিষ্কার হইয়া থাকা। তারপর আত্মীয় এগানা এবং ওয়ারিশদের জন্য অসিয়তনামা তৈরী করিয়া রাখা। এমন সুনিশ্চিত ও অবশ্যম্ভাবী ব্যাপার হইতে কোন রকমই অবহেলা ও উদাসীনতা প্রদর্শন করা চাই না। যেহেতু মৃত্যুর আগমনে কোন সন্দেহ নাই। মৃত্যুর স্মরণ করা এইজন্য প্রয়োজন যে, হুযুরে পাক ﷺ এরশাদ করিয়াছেন, তোমরা বেশী পরিমাণে মৃত্যুর কথা স্মরণ কর। যদি তোমরা তোমাদের স্বচ্ছল এবং প্রাচুর্যের অবস্থায় মৃত্যুকে স্মরণ কর, তবে তোমরা বিলাসিতা ও ভোগ উপভোগের মোহ হইতে পরিত্রাণ লাভ করিবে। আর যদি তোমরা তোমাদের অভাব অভিযোগের সময় মৃত্যুকে স্মরণ কর, তবে ঐ দূরবস্থা তোমাদের জন্য অসহনীয় ও অস্বস্তিকর মনে না হইয়া বরং তোমাদের কাছে উহাই অধিকতর প্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবে। হুযুরে পাক ﷺ এরশাদ করিয়াছেন, তোমরা জান কি, সর্বাপেক্ষা বেশী জ্ঞানী ব্যক্তি কে? সর্বাপেক্ষা বেশী জ্ঞানী ব্যক্তি সে-ই, যে সদা-সর্বদা মৃত্যুকে স্মরণ করে। আর সর্বাধিক সতর্ক ও হুঁশিয়ার ব্যক্তি সে-ই, যে মৃত্যুর জন্য বেশী পরিমাণে প্রস্তুতি গ্রহণ করিয়া থাকে ।


সাহাবায় কিরাম আরজ করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ! মৃত্যুর জন্য বেশী প্রস্তুতির অর্থ কি? হুযুর ﷺ এরশাদ করিলেন, উহার অর্থ হইল, এই প্রতারণাকেন্দ্র অর্থাৎ দুনিয়া হইতে খুব দূরে অবস্থান করা এবং চিরস্থায়ী গৃহের দিকেই মন ঝুঁকাইয়া রাখা।

হযরত লোকমান হেকিম তাঁহার পুত্রকে এইরূপ উপদেশ দান করিয়াছিলেন যে, হে প্রিয়পুত্র! তুমি তাওবাহ করাকে আগামী দিনের জন্য ফেলিয়া রাখিও না। কেননা মৃত্যু অতর্কিতে আসিয়া পড়িবে। হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করিয়াছেন, তোমাদের মধ্যে যাহার নিকট ধন-সম্পদ আছে, অসিয়তনামা তৈরী না করা অবস্থায় তাহাদের দুইটি রাত কাটানোও উচিত হইবে না।

হাদীস শরীফে আরও আসিয়াছে যে, তোমরা হিসাব প্রদান করিতে যাওয়ার পূর্বেই নিজেদের হিসাব করিয়া লও। দাড়ি-পাল্লায় আমল মাপা হইবার পূর্বেই নিজেদের আমল ওজন করিয়া দেখ। আর তোমরা দুনিয়াবী জীবনে আমলসমূহ করিতে এ কথা ভুলিও না যে, কালই তোমাদের মৃত্যু হাজির হইতে পারে।

এই জন্যই জ্ঞানীদের উচিত, তাহাদের মৃত্যু আসিবার পূর্বেই সেইসব কাজ সমাধা করিয়া রাখিয়া সম্পূর্ণ তৈরী হইয়া থাকিবে যাহা তাহাদের উপরে অবশ্য কর্তব্য। গুনাহসমূহ হইতে তাওবাহ করিয়া পাক পবিত্র হইয়া থাকিবে। অন্যের যাবতীয় দেনা-পাওনা ও হক-হুকুম হইতে মুক্ত হইয়া থাকিবে। যদি এইরূপভাবে প্রস্তুত না হইয়া থাক, তবে জানিয়া লও যে, মৃত্যু তো অবশ্যই হঠাৎ আসিয়া পড়িবে, আর তখন তোমার মাথায় ঐ সময় দায় দায়িত্ব লইয়া দুনিয়া হইতে বিদায় লইতে হইবে এবং যাহার ফলে তুমি কঠিনভাবে গ্রেফতার হইয়া যাইবে। প্রথমতঃ কবরেই তোমার ভয়ংকর আযাব শুরু হইয়া যাইবে। তুমি যতই শক্তিধর, সাহসী ও বাহাদুর হও না কেন তাহা কোনই কাজে আসিবে না। তোমার যে কোন কৌশল, জ্ঞান-বুদ্ধি পরিচালনা কিংবা আবেদন-নিবেদন, কাকুতি-মিনতি সব কিছু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইবে। তখন তোমার অবস্থা তো এইরূপ হইবে যে, দুনিয়াতে তোমার সঞ্চিত নাহক মাল দৌলত হয়ত বা তোমার স্ত্রী-পুত্র, পিতা-মাতা, ভাই-বন্ধুর হাতে চলিয়া যাইবে। অথবা তোমার পরম শত্রুর হাতে গিয়া পৌছিবে। তোমার সঙ্গে উহার কিছুই যাইবে না। কিছু তোমার কবরের মধ্যে রাখিয়া দিলেও উহার দ্বারা তোমার কোন উপকার হইবে না, উহা তোমার কোন কাজে আসিবে না। পক্ষান্তরে ঐ মাল দৌলতেরই কারণে তুমি ভয়ংকর শাস্তির শিকার হইবে এবং একাধারে ঐ শাস্তি চলিতে থাকিবে।
👇
বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী 
                          রহমাতুল্লাহি আলাইহি 
(গুনিয়াতুত্ব ত্বালিবীন)

মাওলানা তারিক জামিল হুজুরের চমৎকার বয়ান  - বাংলা সাবটাইটেল 🥰🥰
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url