আউলিয়ায়ে কেরামের মোকাবিলা করিও না



ওলীদের ঘটনা | ওলীদের মর্যাদা



আউলিয়ায়ে কেরামের মোকাবিলা করিও না
ওলীদের মর্যাদা



আউলিয়ায়ে কেরামের মোকাবিলা করিও না

 


হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ফরমাইয়াছেনঃ হে খাহেশাতের গোলামগণ! তোমরা কখনও ছাহেবে হাল লোকদের অর্থাৎ আউলিয়ায়ে কেরামদের মুকাবিলা ও বিরোধিতা করিও না। কেননা তাঁহারা তো আল্লাহর গোলাম। তোমরা সম্পূর্ণভাবে দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকিয়া পড়িয়াছ। তোমাদের অন্তরের প্রধান ঝুঁকির কেন্দ্র হইতেছে দুনিয়া আর তাঁহারা (আউলিয়াগণ) আখেরাত মুখী। তোমাদের দৃষ্টি দুনিয়ার প্রতি সীমাবদ্ধ আর তাঁহারা আকাশ জমীনের প্রভূর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করিয়াছেন। তোমাদের প্রেমকেন্দ্র হইতেছে মাখলুক ও মানুষ। আর তাঁহাদের প্রেম ও মহব্বত হইতেছে আল্লাহর সঙ্গে।

তোমাদের অন্তর দুনিয়াদারের সহিত জড়িত আর তাঁহাদের অন্তর মালিকের সঙ্গে জড়িত। আর তোমরা যেই বস্তুকেই দেখ উহার শিকার হইয়া যাও। তাহারা

ঐসব বস্তুর দিকে দৃষ্টিপাত করেন না যেই সকল বস্তু বা মাখলুক তাহাদের প্রতি নজর করে বরং তাহারা বস্তুর সৃষ্টিকর্তার দিকে দেখেন যাঁহাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়না। তাহারাই উদ্দেশ্যে সফলকাম হইয়া মুক্তি লাভ



করিয়াছেন। আর তোমরা দুনিয়ার লোভ লিপসায় বন্দী হইয়া আছ। তাঁহারা খাহেশাত, মাখলুকাত, ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য হইতে মুক্ত হইয়া আল্লাহ্ তা'আলার নিকটে পৌঁছিয়া গিয়াছে এবং তাহাদিগকে আল্লাহ তা'আলা ঐসব বিষয়ের প্রতি অবগত করাইয়া দিয়াছেন যাহা সৃষ্টির মূল রহস্য ও কারণ ছিল। অর্থাৎ সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য ও রহস্য হইতেছে আল্লাহর বন্দেগী ও তাঁহার প্রশংসা করা। আর এই সব বিষয় হইতেছে আল্লাহর খাছ অনুগ্রহ। তিনি যাহাকে ইচ্ছা করেন তাহাকেই ইহা দান করেন।

তাঁহারা আল্লাহর প্রশংসাকে ওয়াযিব মনে করিয়া সর্বদা হামদ ও ছানা পড়িতে থাকে এবং আল্লাহর দেওয়া তৌফিকে বিনাকষ্টে অতি সহজেই তাহারা ইহার মধ্যে সর্বদা মশগুল থাকে। অতএব আল্লাহর বন্দেগী করা তাঁহাদের রূহানী খাদ্য হইয়া যাওয়াতে তাঁহাদের জন্য দুনিয়াও এমন নেয়ামত ও শান্তির বিষয়ে পরিণত হইয়াছে যে তাহারা যেন জান্নাতে বাস করিতেছেন। কেননা তাঁহারা কোন সৃষ্টির প্রতি নজর করিবার পূর্বেই সেই মাখলুকের খালেক ও খালেকের কুদরতি কাজ দেখিয়া থাকেন।

এই সকল আউলিয়ায়ে কেরামের বরকতেই আকাশ জমীনের স্থায়িত্ব এবং জিন্দা মুর্দার স্থিতি বিরাজ করিয়া থাকে। কেননা তাঁহাদিগকে পৃথিবীর মধ্যে পৃথিবীর খুঁটি ও পেরাগ হিসাবে সৃষ্টি করা হইয়াছে। যাহার কারণে প্রত্যেকেই একটি ভারি পাহাড় হইয়া নিজ নিজ স্থানে প্রতিষ্ঠিত আছেন। অতএব তোমরা তাহাদের সঙ্গে কোন প্রকার বিবাদ করিও না। তাঁহাদের পথে অন্তরায় হইও না। তাহাদের পথ হইতে সরিয়া দাঁড়াও। কেননা তাঁহাদের মাতাপিতা এবং আওলাদ ফরজন্দও তাঁহাদের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করিতে পারে নাই।

তাঁহারা ঐলোক যাঁহারা সকলের উর্ধে সম্মান লাভ ও মর্যাদার অধিকারী হইয়াছেন, যাহাদিগকে আমার পরওয়ারদেগার সৃষ্টি করিয়া পৃথিবীতে ছড়াইয়া দিয়াছেন। যতদিন আকাশ জমীন কায়েম আছে ততদিন তাঁহাদের উপর আল্লাহর রহমত ও ছালাম নাযিল হইতে থাকিবে।
👇
বড় পীর হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী
                                       রহমাতুল্লাহি আলাইহি
(ফতুহুল গয়ব)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url