বর্বর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ও এক সত্যবাদী যুবকের ঘটনা





বর্বর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ও এক সত্যবাদী যুবকের ঘটনা
হাজ্জাজ বিন ইউসুফ


 

হাজ্জাজ বিন ইউসুফ : ইতিহাসের এক বর্বর শাসকের গল্প



বর্ণিত আছে যে, হযরত হাতীত যাইয়্যাদ হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফের নিকট নীত হলে সে তাকে জিজ্ঞেস করল, কি হে! তুমিই নাকি হাতীত যাইয়্যাদ? তিনি বললেন, হাঁ, আমিই হাতীত যাইয়্যাদ। তোমার কিছু জিজ্ঞেস করার থাকলে জিজ্ঞেস করতে পার। তবে আমি মাকামে ইব্রাহীমে দাঁড়িয়ে আল্লাহর সঙ্গে তিনটি অঙ্গীকার করে এসেছি। (১) আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে আমি সত্য জবাব দেব। (২) যদি আমাকে কেউ কোনরূপ বিপদগ্রস্ত করে তোলে তাতে আমি ধৈর্য ধারণ করব এবং (৩) আমাকে কেউ ক্ষমা করলে আমি আল্লাহর দরবারে শোকর জানাব। হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ বলল, তুমি আমার সম্বন্ধে কি মত পোষণ কর? হাতীত, বললেন, তুমি দুনিয়ায় আল্লাহর শত্রুদের অন্যতম। তুমি মানুষের সম্মান নষ্ট কর এবং কথায় কথায় মানুষ হত্যা কর। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করল, তুমি খলীফা আবদুল মালেক ইবনে মারওয়ান সম্বন্ধে কি মত পোষণ কর? তিনি বললেন, সে তোমার চেয়েও অধিক পাপী। আর তার পাপের মধ্যে একটি পাপ তুমি। এ কথা বলা মাত্র হাজ্জাজ বলল, তোমরা একে শাস্তি দাও। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রতি কঠোর শাস্তি শুরু হল। তাঁকে প্রহারের চোটে জল্লাদের চাবুক ভেঙ্গে গেল। তারপর হাজ্জাজের লোকগণ তাঁকে রশি দ্বারা বেঁধে তাঁর শরীরের মাংস ছুরি দ্বারা কর্তন করতে লাগল। মাংসগুলোকে কেটে টুকরো টুকরো করা হল; কিন্তু তিনি তাতে এতটুকু আহাঃ উহুঃ করলেন না। তখন হাজ্জাজকে বলা হল, এর জীবনের শেষ মুহূর্ত ঘনিয়ে এসেছে। হাজ্জাজ বলল, এর প্রাণ বের হয়ে গেলে একে বাইরে নিয়ে বাজারের রাস্তায় ফেলে দেবে। হযরত জাফর (রহঃ) বলেন, এ সময়ে আমি এবং তার এক বন্ধু তার নিকট এসে জিজ্ঞেস করলাম, হাতীত! তোমার কোন কিছু প্রয়োজন আছে কি? তিনি বললেন, তোমরা আমাকে এক ঢোক পানি খেতে দাও। আমরা তাকে পানি এনে দিলাম। পানি পান করার সাথে সাথে তার প্রাণবায়ু বের হয়ে গেল। কথিত আছে যে, এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র অষ্টাদশ বছর। আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহম করুন।

👇

হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)

(এহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন) 






খলিফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান এবং এক বুজুর্গ ব্যক্তির ঘটনা
ইসলামিল সত্য ঘটনা


খলিফা সম্পর্কে কিছু কথাঃ

উমাইয়া বংশের পঞ্চমতম খলিফা ছিলেন আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান। তাকে বলা হতো 'রাজেন্দ্র' বা Father of Kings। কারণ পরবর্তী কালে তার ৪ ছেলেই সিংহাসনে বসে ছিলেন।

খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান এবং এক বুজুর্গ ব্যক্তির ঘটনাঃ


 ইবনে আবী শুমায়লা একজন বিখ্যাত সুধী এবং বুদ্ধিজীবি ব্যক্তি ছিলেন । তিনি একদা খলীফা আবদুল মালেক ইবনে মারওয়ানের নিকট গেলেন। আবদুল মালেক তাঁকে বললেন, জনাব কিছু বলুন। তিনি বললেন, কি আর বলব, আপনি তো নিজেই জানেন, বক্তা যা কিছু বলে তার জন্য তা’ দুর্ভাগ্যের কারণ হয়ে থাকে। শুধু সেই কথা ব্যতীত, যা আল্লাহর উদ্দেশ্যে বলা হয়। তার একথা শুনামাত্র খলীফা আবদুল মালেক কেঁদে উঠলেন এবং বললেন, আল্লাহ্ আপনার প্রতি রহম করুন। মানুষ তো সবসময়ই একে অপরকে উপদেশ দেয়। ইবনে আবী শুমায়লা বললেন, আমীরুল মু'মিনীন! রোজ কিয়ামতে মানুষ কথারই তিক্ততায় গলা আটকে যাওয়া থেকে এবং নিজের ধ্বংস প্রত্যক্ষ করা থেকে মুক্তি পাবে না। তার একথাটি শুনেও খলীফা আবদুল মালেক আবার কেঁদে উঠলেন এবং বললেন, আমি আপনার এ অমূল্য বাণীগুলোকে সারা জীবন অনুপম চিত্রের ন্যায় চোখের সামনে রেখে দেব।


খলিফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান

জন্ম - ৬৪৬

মৃত্যু - ৭০৫


👇

হযরত ইমাম গাজ্জালী (রাহঃ)

(এহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন)


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url