রূহানী লোকদের দলভুক্ত হওয়ার পন্থা - হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
![]() |
| অমূল্য নসিহত |
রূহানী লোকদের দলভুক্ত হওয়ার পন্থা
হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ফরমাইয়াছেন,
তুমি কখনও ঐ পর্যন্ত রূহানী লোকদের দলভুক্ত হওয়ার লোভ করিও না যেই পর্যন্ত তুমি স্বীয় অস্তিত্বের সঙ্গে শত্রুতা না করিবে এবং তোমার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হইতে বিচ্ছিন্ন না হইবে। যেই পর্যন্ত তোমার দেহ বা অস্তিত্ব তোমার নিজস্ব ইচ্ছায় নড়াচড়া ও নিরবতা, তোমার কান, তোমার চক্ষু, তোমার কথা, তোমার ধরা, তোমার চেষ্টা, আমল, আকল, তোমার যাবতীয় ঐ সব বিষয় যাহা তোমার মধ্যে রূহ পাওয়া যাওয়ার পূর্বে এবং পরে হইয়াছে, ঐ সকল বিষয় হইতে তুমি আলাদা না হইবে। সেই পর্যন্ত তুমি আধ্যাত্মিক জগতের লোকদের দলভুক্ত হওয়ার লোভ করিও না। কেননা ঐ সকল বিষয় সবগুলিই তোমার প্রভু হইতে তোমার জন্য পর্দা বা অন্তরায়। যখন তুমি শুধু রূহ হইয়া যাইবে, গোপনের গোপন, গায়বের গায়ব, তোমার গোপন রহস্যের মধ্যে ঐ সকল বস্তুর বিপরীত হইয়া যাইবে। প্রত্যেক বস্তুকে তুমি শত্রু, অন্তরায় এবং অন্ধকার ধরিয়া লইবে। যেমনিভাবে হযরত ইবরাহীম (আঃ) বলিয়াছেন, রাব্বুল আলামীন ছাড়া তাহারা সকলেই আমার শত্রু। তিনি এই কথা বলিয়াছেন মূর্তিসমূহের প্রতি লক্ষ্য করিয়া। তুমিও তোমার অস্তিত্ব, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সমূহকে সমগ্র মাখলুকের সঙ্গে মূর্তি মনে কর। ইহার কোনটিরই অনুসরণ করিও না এবং মোটেই তাহাদের অনুকরণ করিও না। তখন গোপন রহস্য, এলমে লাদুনী ও উহার আশ্চর্য বিষয় সমূহের প্রতি তুমি নিরাপদ থাকিবে। তোমাকে সৃজন ক্ষমতা দান করা হইবে এবং স্বাভাবিক নিয়মের উর্ধে তোমাকে অলৌকিক ক্ষমতা বা কারামত দান করা হইবে। যাহা ঐ ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত যেই ক্ষমতা মুমেনগণকে জান্নাতের মধ্যে দান করা হইবে। তখন তুমি দুনিয়াতেই বেহেশতের ক্ষমতা প্রাপ্ত হইবে। যেন তুমি মৃত্যুর পর আখেরাতের মধ্যে পুনঃ জীবন লাভ করিয়াছ।
তখন তোমার সম্পূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গই একটি কুদরত ও খোদায়ী ক্ষমতা হইয়া যাইবে। ফলে তুমি খোদায়ী ক্ষমতায় শ্রবণ করিবে, দেখিবে, খোদার সঙ্গে কথা বলিবে, আল্লাহর শক্তিতেই তুমি কোন কিছু ধরিবে আল্লাহর ক্ষমতা বলেই তুমি দৌড়াইবে। তুমি বুঝিবে, তোমার মধ্যে স্থিরতা আসিবে, মনে শান্তি লাভ করিবে। তুমি আল্লাহর সঙ্গেই থাকিবে, আল্লাহ ছাড়া অপর সবকিছু হইতে অন্ধ হইয়া
যাইবে এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য সকল কিছু হইতে কান বধির হইয়া যাইবে। তখন তুমি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাহারও অস্তিত্বই দেখিবে না।
তবে উল্লেখিত অবস্থায় তুমি আল্লাহর সীমা রক্ষা করিতে হইবে, তাঁহার আদেশ নিষেধ মানিয়া চলিতে হইবে। যদি আল্লাহর সীমা রক্ষা করার ব্যাপারে তোমার মধ্যে সামান্য ত্রুটিও দেখা যায় তাহা হইলে জানিয়া রাখ যে, তুমি বিপদে পড়িয়াছ, তোমার সঙ্গে শয়তানের খেলা শুরু হইয়াছে। তখন তুমি শরীয়তের হুকুমের দিকে ফিরিয়া আস উহাকে কঠোরভাবে ধারণ কর এবং তোমার খাহেশ বর্জন কর।
আধ্যাত্মিক তত্ত্বের যেই কাজ শরীয়ত সম্মত হইবে না তাহা সম্পূর্ণ ধর্মহীনতা। যেই ব্যক্তি হাকীকতে পৌছিবার দাবীদার অথচ তাহার এই হাকীকত শরীয়তে সম্মতি নাই। শরীয়ত উহার পক্ষে কোন প্রমাণ দেয় না তাহা হইল সেই ব্যক্তি জেন্দীক।
👇
(ফতুহুল গায়ব)
