খিজিরের তক্তিতে লেখা সাতটি উপদেশ - ফাজায়েলে আ'মাল
ফাজায়েলে আমল কিতাব - ফাজায়েলে আমল বংলা
![]() |
| ফাজায়েলে আমল |
ফাযায়েলে আমল - মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি (রহঃ)
খিজিরের তক্তিতে লেখা সাতটি উপদেশ
হাফেজ ইবনে হাজার আছকালানী (রহঃ) মুনাব্বেহাত নামক গ্রন্থে লিখিয়াছেন।
হযরত ওসমান (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, খিজির (আঃ) ভগ্ন দেওয়ালের নীচ হইতে এতীম ছেলেদের জন্য যে সম্পদ বাহির করিয়াছিলেন উহা ছিল একটা স্বর্ণের পাত। উহাতে নিম্নলিখিত সাতটি লাইন ছিল
(১) আমি আশ্চর্যবোধ করি ঐ ব্যক্তির উপর, যে মউতকে নিশ্চিতভাবে জানিয়াও কেমন করিয়া হাসে?
(২) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর, যে ইহা জানে যে, এই দুনিয়া এক দিন খতম হইয়া যাইবে, তবুও সে কেমন করিয়া দুনিয়ার দিকে আকৃষ্ট হয়?
(৩) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর, যে উহা জানে যে, সব কিছুই আল্লাহর তরফ হইতে নির্দিষ্ট হইয়া আছে (অর্থাৎ তক্বদীরকে বিশ্বাস করে) তবুও তাহার কোন জিনিস হাছেল না হইলে কেন আফছোছ করে?
(৪) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর, যাহার আখেরাতে হিসাব দেওয়ার উপর পূর্ণ বিশ্বাস আছে, অথচ তবুও সে ধন সম্পদ জমা করে?
(৫) আমি আশ্চর্য বোধ করি ঐ ব্যক্তির উপর, যে জাহান্নামের আগুন বিশ্বাস করে তবুও সে কেমন করিয়া গোনাহ করে?
(৬) আমি আশ্চর্য বোধ করি ঐ ব্যক্তির উপর, যে আল্লাহ পাককে জানে তবুও সে কি করিয়া অন্য জিনিসের আলোচনা করে?
(৭) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর, যে বেহেশতের সুখ শান্তির কথা জানে তবুও সে কি করিয়া দুনিয়ার কোন জিনিস দ্বারা শান্তি পায়? কোন কোন বর্ণনায় ইহাও রহিয়াছে যে, আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর, যে শয়তানকে শত্রু জানা সত্ত্বেও কি করিয়া তাহার অনুসরণ করে?
হুজুরে পাক (ছঃ) এরশাদ করেন, হযরত জিব্রাঈল (আঃ) আমাকে আল্লাহর জিকিরের এত বেশী তাকীদ করিতেন যে, আমার ধারণা হইতে লাগিল যে, জিকির ব্যতীত অন্য কোন জিনিসই কাজে আসিবে না। এই সব রেওয়ায়েত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, যত অধিক হউক না কেন জিকির করিতে ত্রুটি করিবে না। লোকে রিয়াকার অথবা পাগল বলিবে ইহা মনে করিয়া জিকির ছাড়িয়া দেওয়া নিজেরই ক্ষতি ছাড়া আর কিছু নয়।
ছুফিয়ায়ে কেরাম লিখিয়াছেন, ইহাও শয়তানের একটি ধোঁকা। সে প্রথমে জিকির হইতে এই বলিয়া বিরত রাখে যে, লোকে দেখিবে, লোকে কি বলিবে ইত্যাদি ইত্যাদি। জিকির হইতে ফিরাইবার জন্য শয়তানের ইহা একটি বিরাট চক্রান্ত। কেননা লোকদেখানোর জন্য কোন এবাদত তো করিবেই না, তবে এবাদত করিতে গেলে যদি লোকে দেখিয়া ফেলে তোমার তাতে কি আসে যায়? যে যাহা ইচ্ছা তাহাই বলুক। শয়তানের ধোঁকায় তুমি যেন এবাদত ছাড়িয়া না দাও।
👇
ফাজায়েলে আ'মাল
ইসলামিক সুন্দর উক্তি
![]() |
| ইসলামিক উক্তি |
বুজুর্গদের বাণীঃ
১) হযরত ইদ্রিস (রহঃ) -- আল্লাহ ব্যতীত অপর কাহারও উপর আশা না করা ও অপর কাহাকেও ভয় না করাই প্রকৃত তাওয়াক্কুল।
২) হযরত হাসান বসরী (রহঃ) – সংসারের প্রতি একবিন্দু অনাসক্তি সহস্র বৎসরের নামায রোযা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
৩) হযরত জোনায়েদ বাগদাদী (রহঃ) –
- ১। বিপদকে সম্পদ মনে করা সন্তোষ।
- ২। দুশ্চরিত্র আলেম অপেক্ষা সৎ স্বভাববিশিষ্ট ফাসেকের বন্ধুত্ব আমার অধিক প্রিয়।
৪) হযরত ইয়াহইয়া (রহঃ) -- তওবা করার পর একটি গোনাহ করা তওবা করার পূর্বে ৭০টি অপেক্ষা গুরুতর।
৫) হযরত সররি সকতি (রহঃ) — যে মনে অহঙ্কার থাকে, সে মনে আল্লাহ্'র ভয় ও আশা থাকে না।
৬) হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) – চার শ্রেণীর লোক আল্লাহ্'র অধিক প্রিয় –
- ১। দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত আলেম।
- ২। তত্ত্বজ্ঞানী সুফী।
- ৩। বিনয়ী ধনী ও
- ৪। কৃতজ্ঞ দরিদ্র।
৭) হযরত আবু হাফেজ মক্কী (রহঃ) – নির্মল আনন্দ এ সংসারে সৃষ্টি হয় নাই।
৮) হযরত আবু মুহাম্মদ রমিম (রহঃ) -- মনের আনন্দে আল্লাহ্'র আদেশকে অভ্যর্থনা করাই আল্লাহ্'র প্রকৃত বাধ্যতা ।
৯) হযরত ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) – সমস্ত দুনিয়া একখণ্ড রুটির জন্য বিক্রয় হইলে আমি তাহা ক্রয় করিব না।
১০) হযরত আবু সোলায়মান (রহঃ) -- দুই ব্যক্তি ব্যতীত অন্যের সহিত বন্ধুত্ব করিও না।
- ১। এমন ব্যক্তি যে তোমার সাংসারিক ব্যাপারে সাহায্যকারী হইবে।
- ২। যে তোমার আখেরাতের কাজে সাহায্যকারী হইবে, এ ছাড়া অন্যের সহিত বন্ধুত্ব করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়।


