ফরজ ছাড়িয়া নফল করা বোকামী - হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী(রহঃ)
বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী রহঃ এর অমর বাণী - বড় পীরের বাণী
ফরজ ছাড়িয়া নফল করা বোকামী
হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ফরমাইয়াছেন, মুমেনের জন্য উচিত যে, সে যেন সর্বপ্রথম ফরজ আদায়ের মধ্যে লিপ্ত হয়। ফরজ আদায় করিয়া অবসর হওয়ার পর সুন্নত আদায়ে লিপ্ত হইবে। অতঃপর নফল ও
মোস্তাহাব সমূহ আদায় করার মধ্যে রত হইবে। ফরজ আদায় হইতে অবসর না হওয়া পর্যন্ত সুন্নত আদায়ের মধ্যে মশগুল হওয়া আহমকী এবং বোকামী। ফরজ আদায়ের পূর্বে যদি সুন্নত ও নফল আদায়ের মধ্যে মশগুল হয় তাহা হইলে উহা কবুল করা হইবে না এবং তাহাকে অপমান করা হইবে। তাহার উদাহরণ ঐ ব্যক্তির ন্যায় যাহাকে বাদশাহ তাঁহার খেদমতের জন্য ডাক দিবে। সে তখন বাদশাহের খেদমতে না আসিয়া আমীরের খেদমতে অবস্থান করিল যেই আমীর বাদশাহের গোলাম ও খাদেম তুল্য এবং যেই আমীর বাদশাহের অধিনস্থ ও তাঁহার নিকট হইতে প্রশাসন ক্ষমতা প্রাপ্ত একজন লোক। হযরত আলী (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত হইয়াছে, তিনি বলিয়াছেন, হযরত রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ "যেই ব্যক্তি ফরজ নামাজ জিম্মায় রাখিয়া নফল নামাজ আদায় করে তাহার উদাহরণ হইতেছে একজন গর্ভবতী নারীর ন্যায়। সে গর্ভধারণ করিয়াছে, যখন তাহার নেফাছের অর্থাৎ সন্তান প্রসবের সময় নিকটবর্তী হইয়াছে তখন সে ঐ গর্ভ নষ্ট করিয়া দিয়াছে। তখন সেই মহিলা আর গর্ভবতীও রহিল না এবং সন্তানের জননীও হইল না।”
অনুরূপভাবে নফল নামাজ আদায়কারীর নামাজ আল্লাহ পাক ঐ পর্যন্ত কবুল করিবেন না যেই পর্যন্ত সে ফরজ আদায় না করিবে এবং সেই মুছল্লীর উদাহরণ একজন ব্যবসায়ীর ন্যায়, ব্যবসায়ী যেই পর্যন্ত তাহার মূলধন গ্রহণ না করিবে সেই পর্যন্ত লাভ মুনাফা হাসিল করিতে পারিবে না। অনুরূপভাবে নফল নামাজ আদায়কারী ফরজ আদায় না করা পর্যন্ত তাহার নফল কবুল করা হইবে না। এই নফল দ্বারা সে লাভবান হইতে পারিবে না। অনুরূপভাবে যেই ব্যক্তি সুন্নত বৰ্জন করিয়া নফল আদায়ের মধ্যে মশগুল হইয়া যাইবে অথচ ঐ নফল তাহার উপর ফরজের সঙ্গে স্থায়ী বা জরুরী করা হয় নাই এবং উহা আদায় করার জন্য তাকীদও করা হয় নাই তাহার অবস্থাও পূর্বে উল্লেখিত ব্যক্তির ন্যায় হইবে। তাহার এই নফল কবুল করা হইবে না। ফরজ সমূহের মধ্যে রহিয়াছে হারাম ও আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা বর্জন করা, আল্লাহর প্রতি তকদীর ও আল্লাহর ফায়সালার ব্যাপারে অভিযোগ করা। মানুষের ডাকে সাড়া দেওয়া, তাহাদের অনুসরণ করা, আল্লাহর হুকুম হইতে বিমুখ হওয়া ও আল্লাহর বন্দেগী হইতে মুখ ফিরাইয়া নেওয়া, এই সব কিছু বর্জন করা ফরজ।
হযরত নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ “আল্লাহর নাফরমানীর মধ্যে কোন মাখলুকের অনুসরণ করা যাইবে না। কোন মাখলুকেরক কথা মানিলে যদি আল্লাহর নাফরমানী হয় এবং উহাতে গুনাহ হয় তাহা হইলে সেই মাখলুকের হুকুম পালন করিতে পারিবে না বরং তাহার হুকুম অমান্য করা ফরজ হইবে।”
👇
(ফতূহুল গয়ব)
হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
