মারফতী লোকদের দোয়া মাঝে মাঝে কবুল না হওয়ার কারণ
![]() |
| বড় পীরের বাণী |
দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ
একটি সুন্দর পোস্টঃ
ইমাম হযরত আবু হানিফা (রহঃ) এর জীবনী
হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ফরমাইয়াছেন, আহলে মারফত আল্লাহর নিকট যাহা চায় উহার সবগুলি এই কারণে কবুল হয় না এবং তাহার সকল ওয়াদা এই জন্য পূরণ করা হয় না, যেন তাহার অন্তরে আশার ভাব প্রবল না হইয়া যায়। কারণ আশা প্রবল হইয়া গেলে সে ধ্বংস হইয়া যাইবে। কেননা প্রত্যেক হালত ও মোকামের জন্য ভয় এবং আশা উভয়টিই রহিয়াছে। ভয় এবং আশা উভয়টি একটি পাখীর দুইটি ডানার ন্যায়। দুই ডানা ছাড়া পাখী পূর্ণাঙ্গ হয়না। আত্মাধিক জগতে আহলে মারফতের হাল ও মোকাম ইহাদের উপযুক্ত ভয় ও আশা ছাড়া তেমনিভাবে পরিপূর্ণ হয়না।
অতএব আরেফবিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর মারফত হাসিলকারী আল্লাহর নৈকট্য লাভ করিয়াছে, তাহার হাল ও মোকাম এমন হওয়া চাই যে, সে
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন বস্তুর এরাদা রাখিতে পারিবেনা। তাহার মুরাদ ও মকছুদ একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই হইতে হইবে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কাহারও দিকে সে ঝুঁকিবেনা। তাহার মনে শান্তি ও স্থিরতা আসিবেনা এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাহারও জন্য তাহার প্রেম ও ভালবাসা হইবেনা। অতএব আল্লাহর নিকট তাহার প্রার্থনার মঞ্জুরী চাওয়া এবং তাহার ওয়াদা পুরণের বাসনা রাখা তাহার উদ্দেশ্যের বিপরীত যেই উদ্দেশ্যে ও মুরাদের পিছনে সে লাগিয়া আছে এবং উহা তাহার হাল বা অবস্থার উপযোগী নহে। কেননা তাহার উদ্দেশ্য মুরাদ হইতেছে একমাত্র আল্লাহ্ তায়ালা। কাজেই সে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ব্যাকুল থাকিতে হইবে। নিজের প্রয়োজন মিটাইবার উদ্দেশ্য আল্লাহর এবাদত করিতেছেনা।
এখানে দুইটি বিষয় রহিয়াছে। একটি হইতেছে এই যে, যদি তাহার সকল দোয়া কবুল হয় এবং সকল ওয়াদা পুরণ করা হয় তাহা হইলে সে শুধু আশার মধ্যেই থাকিবে, তাহার সম্মানের প্রতিই নজর থাকিবে। আশা এবং সম্মান এই দুইটির খেয়াল তাহার অন্তরে প্রবল হইয়া যাইবে। কেননা যাবতীয় আশা পুরণ করা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর পক্ষ হইতে একটি কৌশল বটে। নাফরমানকে ঢিল দেওয়ার জন্য এবং আল্লাহর নাফরমানী আরও অধিক পরিমাণে করার জন্য আল্লাহ তায়ালা তাহার সকল আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন।
আরেফ ব্যক্তি তখন আল্লাহ্'র এই কৌশলে ধোঁকায় পড়িয়া যাইবে এবং আল্লাহ হইতে গাফেল হইয়া যাইবে। তখন আল্লাহর সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার হইতে গাফেল হইয়া ধ্বংস হইয়া যাইবে।
দ্বিতীয় বিষয়টি হইতেছে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য যে কোন বস্তুকে সে আল্লাহর সঙ্গে শরীফ করা। কেননা এই জগতে নবীগণের পরে অন্য কোন লোক সম্পূর্ণ গুনাহ্ হইতে পাক নহে।
এই কারণে তাহার দোয়া কবুল করেন না এবং তাহার ওয়াদা পূরণ করেন না। তাহা হইলে যেন সে ছওয়াল করার অভ্যস্থ না হইয়া যায় এবং আল্লাহর নিকট যেন তাহার স্বভাব ও তবীয়তের চাহিদায় সওয়াল না করে। কেননা আল্লাহর আদেশ পালন করার নিয়তে আল্লাহকে ছওয়াল না করিয়া স্বভাব ও তবীয়তের চাহিদায় সওয়াল করা এক প্রকার শিরক। আধ্যাত্মিক জগতের সমস্ত হাল ও সকল কদমে এবং যাবতীয় মোকামেই প্রচুর পরিমাণে শিরক হওয়ার আশংকা থাকে।
হ্যাঁ, যদি আল্লাহর আদেশের অনুকূলে কোন ছওয়াল হয় তাহাতে আল্লাহর নৈকট্য বাড়ে। যথা-নামাজ, রোজা, ইত্যাদি ফরজ ও নফল এবাদতের জন্য প্রার্থনা করা, উহার তৌফিক চাওয়া। কেননা তখন সে আল্লাহর আদেশ পালনকারী হইবে।
👇
ফতুহুল গয়ব
মাওলানা তারিক জামিল হুজুরের চমৎকার নছিহত
👇
