বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী রহঃ এর অমর বাণী
অলিদের বাণী - বড় পীরের বাণী
![]() |
| মোটিভেশনাল কথা |
হুজুরের আরো কিছু নসিহত
👇
আউলিয়ায়ে কেরামের মোকাবিলা করিও না
জোহদ বা শুদ্ধাচারণ
শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলিয়াছেন, জাহেদ বা সাধককে দুইভাবে ছাওয়াব দেওয়া হয়। প্রথম ছাওয়াব হইতেছে আসবাব অর্থাৎ উছিলা ত্যাগ করার কারণে। কারণ সে তাহার নাফছের খাহেশ ও চাহিদানুযায়ী কোন কাজ করেনা। বরং একমাত্র আল্লাহর আদেশানুযায়ী সে আসবাব বা উপায় অবলম্বন করিয়া থাকে। যখন নাফছের সঙ্গে তাহার শত্রুতা ও নাফছের বিরোধীতা এবং তাহার খাহেশের বিরুদ্ধাচারণ মজবুতভাবে ছাবেত হইয়া যায় এবং তাহাকে মুহাক্কেকীন ও অলীগণের মধ্যে গণ্য করা হয় আর আবদাল ও আরেফীনের দলভুক্ত করা হয় তখন তাহাকে আদেশ করা হয় যে শুধু তাহার ভাগ্যে লিখা বিষয়বস্তু গ্রহণ করিবে এবং কেবল মাত্র উহার সঙ্গেই সম্পর্ক রাখিবে। কেননা ইহা তাহার জন্যই হিস্সা নির্ধারণ করা হইয়াছে যাহা অবশ্যই তাহার নিকট পৌঁছিবে, অন্য কাহারও জন্য ইহা সৃষ্টি করা হয় নাই। কেবলমাত্র তাহার জন্যই ইহা লিখিয়া কলম শুকাইয়া গিয়াছে এবং যাহার ইলম পূর্বেই ছিল। যখন সে আদেশ পালন করিবে এবং সেই জিনিষ আদেশানুযায়ী গ্রহণ করিবে অথবা ইলম সম্পর্কে অবগত হইবে অতঃপর সেই
বিষয়ের সঙ্গেই একমাত্র সে জড়িত হইল। কেননা তাহার ভাগ্য ইহার মধ্যেই নির্ধারণ করা হইয়াছে। ইহাতে তাহার খাহেশ, ইচ্ছা, বাসনার কোন দখল নাই, তখন এই কারণে তাহাকে দ্বিতীয়বার ছাওয়াব দেওয়া হয়। কেননা সে আল্লাহর আহকাম পালন করিতেছে এবং আল্লাহর কাজের সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করিতেছে।
যদি কেহ বলে যে আপনি কিভাবে ঐ ব্যক্তির জন্য ছওয়াবের হুকুম দিলেন যেই ব্যক্তি মহান উচ্চ মোকামে পৌঁছিয়া গিয়াছে যেই মোকামের কথা আপনি নিজেই উল্লেখ করিয়াছেন যে, তাহাকে আবদাল ও আরেফীনের দলভুক্ত করিয়া মাকবুল করা হইয়াছে এবং তাঁহারা অর্থাৎ আবদাল ও আরেফীন মাখলুক, নাফছ, খাহেশ, ইচ্ছা, স্বাদ, ভোগ, বাসনা ও আমলের বিনিময়ের আকাংক্ষা ইত্যাদি হইতে সম্পূর্ণ ফানা হইয়া গিয়াছেন। তাঁহারা তাঁহাদের যাবতীয় বন্দেগী ও ইবাদতকে শুধু আল্লাহ্ ক্রিয়া বা ফেল এবং আল্লাহর নেয়ামত ও রহমত মনে করেন এবং তাঁহারা এই বিশ্বাস রাখেন যে, তাঁহাদের এবাদত বন্দেগী একমাত্র আল্লাহর তৌফিক ও তাঁহার পক্ষ হইতে সহজ করিয়া দেওয়ার কারণেই হইতেছে। নিজেদের কোন প্রকার ক্ষমতা বা ইচ্ছা এরাদার কারণে নয় কিংবা কোন মাখলুকের সাহায্যেও নয় এবং তাঁহারা এই বিশ্বাস রাখেন যে, তাঁহারা আল্লাহর গোলাম আর গোলাম তাহার মুনীবের নিকট কোন প্রকার হকের দাবীদার হয় না। কারণ গোলামের দেহ নড়াচড়া, নিরবতা অর্থাৎ তাহার যাবতীয় কাজকর্ম ও উপার্জনের মালিক একমাত্র তাহার মুনীব। এমতাবস্থায় সেই গোলামকে তাহার আমলের জন্য ছাওয়াব বা বিনিময় দেওয়া হইবে এই কথাটি কিভাবে বলা যাইতে পারে? অথচ গোলাম তাহার মুনীবের নিকট কোন প্রকার ছাওয়াব বা বিনিময় তলব করিতেছে না এবং তাহার কাজের বিনিময় চাহিতেছেনা।
অধিকন্তু সে নিজের আমলকে নিজের বলিয়াও মনে করিতেছে না। অর্থাৎ সে নিজ এখতেয়ারে বা নিজ ক্ষমতায় আমল করিতেছে এই ধারণাও সে রাখে না। বরং সে মনে করে তাহার অস্তিত্বই বাতেল। সে সম্পূর্ণ ক্ষমতাশূন্য ও বেকার এবং আমল হইতে সর্বাপেক্ষা অধিক ফকীর। তাহার কোন আমলই নাই।
যখন কেহ এইভাবের প্রশ্ন করিবে তখন তাহাকে বলা হইবে তুমি যাহা বলিয়াছ তাহা সত্য বলিয়াছ তবে আল্লাহ তা'আলা স্বীয় অনুগ্রহে তাহাকে ছাওয়াব পৌঁছাইয়া থাকেন এবং আল্লাহর নেয়ামত সমূহের দিকে তাহাকে পথ প্রদর্শন করেন এবং স্বীয় মেহেরবানী ও দয়ার দ্বারা এবং তাঁহার এহছান ও
করমের দ্বারা তাহাকে লালন পালন করেন। কেননা সে তাহার নাফছের চাহিদা হইতে এবং পরকালে তাহার জন্য স্থায়ীভাবে সঞ্চিত ও রক্ষিত ভোগের বস্তু হইতে এবং নাফছের লাভ লোকসান হইতে হাত গুটাইয়া নিয়াছে। সে যেন একটি দুগ্ধপোষ্য শিশুর ন্যায় হইয়া গিয়াছে। কেননা দুগ্ধপোষ্য শিশু তাহার নিজের নাফছের চাহিদা পুরণের কোন প্রকার হরকত বা আমল করিতে পারে না। বরং আল্লাহ তা'আলা নিজ অনুগ্রহে তাহার মাতা পিতার হাতে শিশুর রিজিকের ব্যবস্থা করেন এবং তাহাদিগকে শিশুর লালন পালনের জন্য উকিল বা কার্য নির্বাহী করিয়া দেন।
যখন বান্দার অন্তর হইতে তাহার নাফছের চাহিদা দূর করিয়া দেন তখন আল্লাহ তা'আলা মানুষের অন্তরকে সেই বান্দার দিকে রুজু করিয়া দেন। মানুষের অন্তরে সেই বান্দার জন্য দয়া সৃষ্টি করিয়া দেন। তখন প্রত্যেক লোকই তাহার দিকে রুজু করে এবং তাহার প্রতি দয়া মহব্বত করে। তাহার প্রতি এহছান করে। এমনিভাবে প্রত্যেক ঐ ব্যক্তির অবস্থাও এইরূপ হইবে যে, আল্লাহ ছাড়া অপর সব কিছু হইতে ফানা হইয়া গিয়াছে। আল্লাহর হুকুম ছাড়া তাহার কোন হরকত হয় না। অথবা আল্লাহর ফেল ছাড়া তাহার মধ্যে কোন নড়াচড়া হয় না। তাহাকে আল্লাহ তা'আলা স্বীয় অনুগ্রহে দুনিয়া ও আখেরাতের পুণ্য দান করিবেন। উভয় জাহানের নেয়ামতের প্রতি তাহাকে পথ প্রদর্শন করিবেন। তাহার যাবতীয় কষ্ট দূর করিয়া দিবেন। তিনি নিজেই সেই বান্দার অভিভাবক হইয়া যাইবেন। স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করিয়াছেন, "নিশ্চয় আমার অলি বা অভিভাবক ঐ আল্লাহ যিনি কিতাব নাযিল করিয়াছেন এবং যিনি নেক্কারদের অভিভাবক হইয়া থাকেন।”
ফতুহল গয়ব🥀
বড় পীর হযরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি❣️
হযরত মাওলানা তারিক জামিল হুজুরের চমৎকার বয়ান
👇
