বাস্তব জীবনের শিক্ষনীয় গল্প - শিক্ষামূলক কাহিনী

 

ইসলামিক শিক্ষনীয় গল্প - ইসলামিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প



বাস্তব জীবনের শিক্ষনীয় গল্প - শিক্ষামূলক কাহিনী
ইসলামিক কাহিনী 


শিক্ষামূলক গল্প ও ঘটনা - চমৎকার শিক্ষনীয় গল্প




শিক্ষামূলক গল্পঃ পর্ব - ১

হযরত হাতেম আসাম রহঃ এবং রায়ের কাজীর চমৎকার শিক্ষনীয় ঘটনা


২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুনঃ

হযরত হাতেম আসাম রহঃ এবং বিচারপতি তানাকেসীর ঘটনা 

হাতেম আছামের শাগরেদ আবু আবদুল্লাহ বলেনঃ আমি একবার ওস্তাদ হাতেমের সাথে রায় প্রদেশে গেলাম এবং আমাদের তিনশ বিশ ব্যক্তির কাফেলাটি হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল। সকলেরই পরিধানে ছিল কম্বল। কারও কাছে খাবার বস্তু ছিল না। আমরা এক ব্যবসায়ী ব্যক্তির বাড়ীতে মেহমান হলাম। সে খুব সঙ্গতিপন্ন লোক না হলেও মেহমান নাওয়াজ ছিল। সে রাত্রে আমাদের আতিথেয়তা করল। পরদিন ভোরে হাতেমকে বলল, আপনার কিছু প্রয়োজন থাকলে বলুন। আমি জনৈক অসুস্থ ফকীহকে দেখতে যাব। তিনি বললেন, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া ছওয়াবের কার্য। আর ফকীহকে দেখতে যাওয়া তো ইবাদাত তুল্য। তুমি আমাকেও নিয়ে চল। এই অসুস্থ ব্যক্তি ছিলেন রায়ের কাজী বা বিচারপতি মুহাম্মদ ইবনে মুক্বাতিল। আমরা তার কুরসীদ্বারা সাজানো সুরম্য দরজা দেখে অবাক হয়ে গেলাম যে, একজন আলিমের গৃহদরজা এরূপ কিভাবে হয়? অনুমতি নিয়ে আমরা ভেতরে ঢুকে দেখলাম, বাসভবনটি বিরাট, উহাতে সুন্দর গালিচা পাতা ও সুদৃশ্য পর্দা লটকানো। দেখে হাতেম আরও বেশী অবাক হলেন। অতঃপর যেখানে নরম গদীর উপরে মুহাম্মদ ইবনে মুক্বাতিল শায়িত ছিলেন, আমরা সেখানে গেলাম। শিয়রের দিকে এক গোলাম দাঁড়িয়ে পাখার বাতাস করতেছিল। ব্যবসায়ী ব্যক্তি মুহাম্মদের শয্যা পার্শ্বে বসে তার অবস্থা জিজ্ঞেস করল। হাতেম দাঁড়িয়ে রইলেন। মুহাম্মদ তাকে বসতে ইশারা করলে তিনি বললেন, আমি বসব না। মুহাম্মদ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কোন কথা আছে কি? হাতেম বললেন, হাঁ একটি মাসলা জিজ্ঞেস করব। মুহাম্মদ


বললেন, করুন। হাতেম বললেন, আপনি উঠে বসলে জিজ্ঞেস করব। মুহাম্মদ উঠে বসলে হাতেম বললেন, আপনি ইলম অর্জন করেছেন কার কাছ থেকে? তিনি জবাব দিলেন, নির্ভরশীল আলিমদের থেকে। প্রশ্ন হল, তাঁরা কার থেকে ইলম শিখেছেন? জবাব হল, সাহাবায় কিরামের কাছ থেকে। প্রশ্ন হল তাঁরা ইলম শিখেছেন কার কাছ থেকে? জবাব হল, হুযুরে পাক (ﷺ) -এর কাছ থেকে। প্রশ্ন হল, তিনি কার কাছ থেকে ইলম শিখেছেন? জবাব হল, ফিরেশতা জিব্রাইলের কাছ থেকে। প্রশ্ন হল, তিনি কার কাছ থেকে ইলম শিখেছেন? জবাব হল, আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে


এবার হাতেম বললেন, যে ইলম আল্লাহর কাছ থেকে জিব্রাইল, তাঁর কাছ থেকে হুযুরে পাক (ﷺ), তাঁর কাছ থেকে সাহাবায় কিরাম, তাঁদের কাছ থেকে নির্ভরশীল আলিমগণ এবং তাঁদের কাছ থেকে আপনি হাছিল করেছেন, তাতে আপনি কোথাও কি পেয়েছেন যে, যে ব্যক্তির গৃহে পরিচারক থাকে, বেশী স্বাচ্ছন্দ্য থাকে, তার মর্তবা আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী? মুহাম্মদ বললেন, না পাইনি। হাতেম জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে কি পেয়েছেন? মুহাম্মদ বললেন, পেয়েছি, যে ব্যক্তি সংসারের প্রতি বিমুখ হয়ে আখেরাতের প্রতি আকৃষ্ট থাকে, অভাবগ্রস্তকে ভালবাসে এবং আখেরাতের জন্য সাজ-সরঞ্জাম আগেই পাঠিয়ে দেয়, তার মর্তবা আল্লাহর দরবারে অধিক হবে। হাতেম বললেন, তাহলে আপনি কার অনুসরণ করছেন? হুযুরে পাক (ﷺ) তার সাহাবায় কিরাম এবং সৎকর্মশীলদের, না ফিরাউন-নমরুদের অনুসরণ করছেন, যারা সর্বপ্রথম দুনিয়াতে ইঁট চুনা দিয়ে ইমারাত তৈরী করেছিল? হে পার্থিব আলিমগণ! তোমাদের ন্যায় লোকদেরকে দেখেই বলে যে, যদি আলিমদের অবস্থা এরূপ হয়, তাহলে তাদের অবস্থা এর চেয়েও খারাপ হবে না কেন? একথা বলে হাতেম বিচারপতি মহাম্মদের নিকট থেকে চলে এলেন। রায়ের জনসাধারণ বিচারপতি মুহাম্মদ এবং হাতেমের এই কথোপকথনের বিষয় জানতে পেরে হাতেমকে বলল যে, বিচারপতি তানাকেসী বিচারপতি মুহাম্মদের চেয়েও বেশী আড়ম্বরপ্রিয়। অতঃপর হাতেম একদা নিজে ইচ্ছা করেই তার কাছে গেলেন এবং বললেন, 

👇

হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)

এহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url